প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আলোকে হিউম্যান রিসোর্স পরিকল্পনা কার্যক্রম পরিচালনা একটি সুষ্ঠু ও সুসংহত পদ্ধতি। এটি একটি প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনাকে সংগঠিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি প্রদান করে। এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন স্তরের পরিকল্পনা, কর্মসূচি এবং কৌশল অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
১. প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো:
ক. সংগঠন ও শ্রেণীবিভাগ:
- প্রাতিষ্ঠানিক স্তর: প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তর যেমন শীর্ষ, মধ্য ও নিম্ন স্তরের ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী HR পরিকল্পনা প্রণয়ন করা।
- শ্রেণীবিভাগ অনুযায়ী: বিভিন্ন বিভাগ (যেমন উৎপাদন, বিপণন, আর্থিক, ইত্যাদি) অনুযায়ী মানবসম্পদ পরিকল্পনার ব্যবস্থা।
খ. জব রোল ও দায়িত্ব:
- জব ডেসক্রিপশন: বিভিন্ন পদে কর্মীদের দায়িত্ব ও কাজের বর্ণনা নির্ধারণ করা।
- কর্মী নির্বাচন: প্রতিটি পদে প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কর্মী নির্বাচন প্রক্রিয়া চালানো।
২. হিউম্যান রিসোর্স পরিকল্পনার কার্যক্রম:
ক. জরিপ ও বিশ্লেষণ:
- চাহিদা বিশ্লেষণ: প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করা, যেমন দক্ষতা, সংখ্যা এবং কাজের ধরনের জন্য মানবসম্পদের প্রয়োজন।
- বিদ্যমান সম্পদের মূল্যায়ন: বর্তমান কর্মীদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করা।
খ. পরিকল্পনা প্রস্তুতি:
- লং টার্ম ও শর্ট টার্ম পরিকল্পনা: সংক্ষিপ্তমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অনুযায়ী HR পরিকল্পনা প্রণয়ন।
- সম্পদ বরাদ্দ: প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ, প্রশিক্ষণ, ও অন্যান্য সম্পদ বরাদ্দ করা।
গ. নিয়োগ ও নির্বাচন:
- নিয়োগ পদ্ধতি: সঠিক নিয়োগ পদ্ধতি নির্ধারণ করা, যেমন সাক্ষাৎকার, মূল্যায়ন পরীক্ষা ইত্যাদি।
- নতুন কর্মীদের জন্য অনবোর্ডিং: নতুন কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সংহতকরণের জন্য পরিকল্পনা করা।
৩. প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন:
ক. কর্মী প্রশিক্ষণ:
- পেশাদার উন্নয়ন: কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করা।
- নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ: প্রযুক্তিগত পরিবর্তন ও আপডেটের জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
খ. পারফরম্যান্স মূল্যায়ন:
- নিয়মিত মূল্যায়ন: কর্মীদের পারফরম্যান্সের উপর নিয়মিত ভিত্তিতে মূল্যায়ন এবং ফিডব্যাক দেওয়া।
- উন্নতির সুযোগ: কর্মীদের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করা।
৪. নিয়ন্ত্রণ ও মূল্যায়ন:
ক. মান নিয়ন্ত্রণ:
- কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ: HR পরিকল্পনার কার্যকারিতা এবং কর্মীদের কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা।
- বিপরীত ফলাফল: পরিকল্পনার প্রতিফলন বিশ্লেষণ করা এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন প্রণয়ন করা।
খ. প্রতিবেদন প্রস্তুতি:
- প্রগতির প্রতিবেদন: HR পরিকল্পনার অগ্রগতি এবং ফলাফল সম্পর্কিত প্রতিবেদন তৈরি করা।
- প্রতিবেদন প্রদান: উচ্চ ব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা।
উপসংহার
প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আলোকে হিউম্যান রিসোর্স পরিকল্পনা কার্যক্রম পরিচালনা একটি সমন্বিত প্রক্রিয়া, যা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি কার্যকর HRM পরিকল্পনা কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন, সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যকরী কৌশলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মানবসম্পদকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের জন্য অপরিহার্য।
0 Comments