অংশীদারি ব্যবসায় ও অংশীদারের প্রকারভেদ
অংশীদারি ব্যবসা (Partnership) হল একটি ব্যবসায়িক গঠন যেখানে দুই বা তার বেশি ব্যক্তি সম্মিলিতভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেন এবং লাভ ও ক্ষতির ভাগাভাগি করেন। এটি সাধারণত একটি অংশীদারিত্ব চুক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যা অংশীদারদের অধিকার, দায়িত্ব এবং লাভের বিভাজন নির্ধারণ করে।
অংশীদারি ব্যবসার প্রকারভেদ:
অংশীদারি ব্যবসাকে সাধারণত দুটি প্রধান প্রকারে ভাগ করা যায়:
1. সাধারণ অংশীদারি (General Partnership)
2. সীমিত অংশীদারি (Limited Partnership)
১. সাধারণ অংশীদারি (General Partnership)
সংজ্ঞা:
সাধারণ অংশীদারি হল একটি ব্যবসায়িক গঠন যেখানে সকল অংশীদার ব্যবসার সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং লাভ-ক্ষতির পুরো দায়িত্ব নেন।
বৈশিষ্ট্য:
- সকল অংশীদার ব্যবসার সকল কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সমান অধিকার থাকে।
- সমস্ত অংশীদার ব্যবসায়ের দেনা ও দায়িত্বের জন্য একসাথে দায়ী।
- সাধারণ অংশীদাররা ব্যবসার পরিচালনা ও প্রতিদিনের কার্যক্রমে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখেন।
সুবিধা:
- ব্যবসার পরিচালনা সহজ এবং স্বচ্ছ।
- অংশীদাররা একে অপরের মধ্যে সহযোগিতা ও সহায়তা করতে পারেন।
অসুবিধা:
- অংশীদারদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হতে পারে।
- সকল অংশীদারের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ব্যবসার দেনার জন্য ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।
২. সীমিত অংশীদারি (Limited Partnership)
সংজ্ঞা:
সীমিত অংশীদারি হল একটি ব্যবসায়িক গঠন যেখানে এক বা একাধিক সাধারণ অংশীদার এবং এক বা একাধিক সীমিত অংশীদার থাকে। সাধারণ অংশীদাররা ব্যবসার পরিচালনা করেন, যখন সীমিত অংশীদাররা কেবলমাত্র তাদের বিনিয়োগের সীমায় দায়িত্ব পালন করেন।
বৈশিষ্ট্য:
- সাধারণ অংশীদাররা ব্যবসার সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
- সীমিত অংশীদাররা কেবলমাত্র তাদের বিনিয়োগের পরিমাণের জন্য দায়ী এবং তারা ব্যবসায়ের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে না।
- সীমিত অংশীদাররা সাধারণত বিনিয়োগকারী হিসেবে কাজ করেন, যারা ব্যবসার লাভে অংশগ্রহণ করেন কিন্তু পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত থাকেন না।
সুবিধা:
- সীমিত অংশীদারদের জন্য ব্যক্তিগত সম্পত্তি ঝুঁকির বাইরে থাকে, যা তাদের নিরাপত্তা প্রদান করে।
- ব্যবসার জন্য বেশি পুঁজির সুযোগ সৃষ্টি করে, কারণ একাধিক সীমিত অংশীদার বিনিয়োগ করতে পারেন।
অসুবিধা:
- সাধারণ অংশীদারদের উপর বেশি দায়িত্ব থাকে।
- সীমিত অংশীদারদের ব্যবসার পরিচালনায় কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, যা কিছু সময়ে ব্যবসার সাফল্যে প্রভাব ফেলতে পারে।
অংশীদারের প্রকারভেদ:
অংশীদারদের সাধারণত দুটি প্রধান প্রকারভেদে ভাগ করা যায়:
1. সাধারণ অংশীদার (General Partner)
2. সীমিত অংশীদার (Limited Partner)
১. সাধারণ অংশীদার (General Partner)
সংজ্ঞা:
সাধারণ অংশীদার হল সেই ব্যক্তি যিনি ব্যবসার সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং লাভ-ক্ষতির জন্য সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেন।
বৈশিষ্ট্য:
- ব্যবসার সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
- ব্যবসার সব দায়িত্ব এবং ঝুঁকি বহন করেন।
- সাধারণ অংশীদাররা ব্যবসার কার্যক্রমের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখেন।
২. সীমিত অংশীদার (Limited Partner)
সংজ্ঞা:
সীমিত অংশীদার হল সেই ব্যক্তি যিনি কেবলমাত্র তাদের বিনিয়োগের পরিমাণের জন্য দায়ী এবং ব্যবসার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন না।
বৈশিষ্ট্য:
- সীমিত অংশীদাররা সাধারণত ব্যবসার লাভে অংশগ্রহণ করেন, কিন্তু তারা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত হন না।
- তাদের দায়িত্ব তাদের বিনিয়োগের সীমায় সীমাবদ্ধ থাকে, তাই তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে না।
উপসংহার:
অংশীদারি ব্যবসা একাধিক ব্যক্তি বা উদ্যোক্তার সহযোগিতার মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যা ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সহায়ক হতে পারে। সাধারণ অংশীদার এবং সীমিত অংশীদার উভয়েরই নিজস্ব সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে, যা ব্যবসার সফলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অংশীদারদের মধ্যে স্পষ্ট যোগাযোগ এবং সহযোগিতা ব্যবসার স্থিতিশীলতা এবং সাফল্যের জন্য আবশ্যক।
0 Comments