Recent Posts

প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর প্রকারভেদ বর্ণনা করো।

 

প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো একটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সংগঠন এবং ব্যবস্থাপনার কাঠামো নির্ধারণ করে। এটি কিভাবে বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করা হবে এবং কাজের বিভাজন কিভাবে হবে তা নির্দেশ করে। প্রতিষ্ঠানের কাঠামো সাধারণত বিভিন্ন প্রকারে বিভক্ত করা হয়। নিচে কিছু প্রধান প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো:


১. ফাংশনাল কাঠামো (Functional Structure):

   - বর্ণনা: এই কাঠামো অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানের বিভাগগুলি তাদের কার্যক্রমের ভিত্তিতে গঠিত হয়। প্রতিটি বিভাগ নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনের জন্য দায়ী থাকে।

   - উদাহরণ: মানবসম্পদ, বিপণন, উৎপাদন, এবং গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ।

   - গুণাবলী: 

     - দক্ষতা বাড়ানো।

     - বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করা।

   - অসুবিধা: বিভাগীয় বিভাজনের কারণে সমন্বয়হীনতা হতে পারে।


২. ডিভিশনাল কাঠামো (Divisional Structure):

   - বর্ণনা: এই কাঠামোতে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগ তাদের নিজস্ব পণ্যের অথবা বাজারের ভিত্তিতে গঠিত হয়। প্রতিটি বিভাগ স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়।

   - উদাহরণ: একটি কোম্পানি বিভিন্ন পণ্যের জন্য আলাদা বিভাগ তৈরি করতে পারে, যেমন গাড়ি, ইলেকট্রনিক্স, এবং খাদ্য।

   - গুণাবলী: 

     - বাজারের পরিবর্তন অনুযায়ী দ্রুত সাড়া দেওয়া।

     - প্রতিটি বিভাগের জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং বাজেট।

   - অসুবিধা: সম্পদ ব্যবহারে দ্বিগুণতা হতে পারে।


৩. ম্যাট্রিক্স কাঠামো (Matrix Structure):

   - বর্ণনা: এই কাঠামোতে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য কর্মীদের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ভাগ করা হয়। কর্মীরা একটি সময়ে একাধিক প্রজেক্টের জন্য কাজ করতে পারে।

   - উদাহরণ: একজন কর্মী মানবসম্পদ বিভাগে কাজ করলেও একটি নতুন পণ্য উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য কাজ করতে পারে।

   - গুণাবলী: 

     - লচিলাতার উচ্চ মাত্রা।

     - বিভিন্ন দক্ষতা থেকে উপকৃত হওয়া।

   - অসুবিধা: কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব এবং সমন্বয়ের সমস্যা হতে পারে।


৪. নেটওয়ার্ক কাঠামো (Network Structure):

   - বর্ণনা: এই কাঠামোতে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত ইউনিট, অংশীদার, এবং বাহ্যিক সংস্থার সাথে সংযুক্ত থাকে।

   - উদাহরণ: একটি প্রযুক্তি কোম্পানি অন্যান্য কোম্পানির সাথে যৌথ উদ্যোগ করে নতুন পণ্য তৈরি করতে পারে।

   - গুণাবলী: 

     - বিভিন্ন দক্ষতার সংমিশ্রণ।

     - দ্রুত পরিবর্তনের জন্য অভিযোজিত।

   - অসুবিধা: নিয়ন্ত্রণের অভাব এবং যোগাযোগের জটিলতা।


৫. প্রোজেক্ট ভিত্তিক কাঠামো (Project-Based Structure):

   - বর্ণনা: এই কাঠামোতে সমস্ত কাজ একটি নির্দিষ্ট প্রকল্পের উপর ভিত্তি করে সংগঠিত হয়। প্রকল্পের সমাপ্তির পর, কর্মীরা আবার তাদের পূর্বের বিভাগে ফিরে যেতে পারে।

   - উদাহরণ: নির্মাণ কোম্পানি প্রকল্প ভিত্তিক কাজ করে।

   - গুণাবলী: 

     - দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং কার্যকরী।

     - উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গি।

   - অসুবিধা: প্রকল্প শেষ হওয়ার পরে কর্মীদের জন্য নিরাপত্তাহীনতা।


উপসংহার

প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর প্রকারভেদ প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম এবং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন কাঠামো তাদের নিজস্ব সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আসে, এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের লক্ষ্য, কৌশল এবং ব্যবসায়িক পরিবেশের ভিত্তিতে সঠিক কাঠামো নির্বাচন করতে হয়। একটি সুসংগঠিত কাঠামো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া সহজতর করে।

Post a Comment

0 Comments