ডিফ্লেশনের উদাহরণ বিভিন্ন দেশে ও সময়ের মধ্যে দেখা যায়। নিম্নে কিছু উল্লেখযোগ্য উদাহরণ তুলে ধরা হলো:
১. যুক্তরাষ্ট্র (1930-এর দশক):
- গ্রেট ডিপ্রেশন: 1929 সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর যুক্তরাষ্ট্রে ডিফ্লেশন দেখা দেয়। মূল্যস্ফীতি নিম্নমুখী ছিল এবং অনেক পণ্যের দাম কমতে শুরু করে। 1930 থেকে 1933 সালের মধ্যে, সারা দেশে পণ্যের দাম প্রায় 25% কমেছিল। এই সময়ে বেকারত্বের হারও অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়েছিল, যা অর্থনীতির সংকোচনের একটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল।
২. জাপান (1990-এর দশক):
- জাপানের "হারানো দশক": 1990-এর দশকে, জাপানে একটি অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়, যেখানে দেশের অর্থনীতি ক্রমাগত সংকুচিত হতে শুরু করে এবং মূল্য কমতে থাকে। এ সময় জাপানের মহামূল্যবোধ বৃদ্ধির পরিবর্তে ডিফ্লেশন দেখা দেয়। এই সময়ে মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পায়।
৩. ইউরোপ (২০১৪-২০১৫):
- ডিফ্লেশন গ্রীক সংকট: ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশে (বিশেষ করে গ্রীসে) ২০১৪ সালে ডিফ্লেশন দেখা দেয়। এই সময়ে, গ্রীক অর্থনীতি সংকটের মধ্যে ছিল এবং কর্মসংস্থান হারাতে শুরু করে, ফলে ভোক্তা চাহিদা কমতে থাকে এবং পণ্যের দাম কমে যায়।
৪. আয়ারল্যান্ড (২০১০-২০১৩):
- আর্থিক সংকট: ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পর, আয়ারল্যান্ডের অর্থনীতি সংকুচিত হয়। ২০১০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে, দেশটি ডিফ্লেশনের অভিজ্ঞতা লাভ করে, যেখানে দাম কমতে থাকে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধীর হয়ে যায়।
৫. কোম্পানির উদাহরণ:
- বিষমুক্ত পণ্য এবং সেবা: কিছু প্রযুক্তিগত পণ্য, যেমন কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের দাম সময়ের সাথে সাথে কমতে থাকে, যা প্রাকৃতিকভাবে ডিফ্লেশনের উদাহরণ হিসেবে দেখা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, প্রযুক্তির উন্নতির কারণে নতুন মডেল বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে পুরানো মডেলের দাম কমে যায়।
৬. স্মার্টফোন বাজার:
- স্মার্টফোনের দাম সাধারণত সময়ের সাথে সাথে কমে যায়, বিশেষ করে নতুন মডেল প্রকাশিত হলে। যদিও এটি একটি নির্দিষ্ট শিল্পের মধ্যে ঘটে, এটি ডিফ্লেশনের একটি উদাহরণ, যেখানে পণ্যের দাম ক্রমাগত হ্রাস পায়।
উপসংহার:
ডিফ্লেশন প্রায়শই অর্থনৈতিক সংকটের সময় ঘটে এবং এটি দেশের অর্থনীতির উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। ডিফ্লেশনের উদাহরণগুলি দেখায় কিভাবে বিভিন্ন দেশ ও সময়ে মূল্য হ্রাস এবং অর্থনৈতিক কার্যকলাপের সংকোচন ঘটে।
0 Comments