Recent Posts

মেসোপটেমীয় সভ্যতা

 


মেসোপটেমীয় সভ্যতার অবস্থান

খ্রিস্টপূর্ব ৫,০০০ অব্দে মিশরে যখন নগর সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, সেই সময় আরো কিছু নগর সভ্যতা গড়ে ওঠে। এই নগর সভ্যতাগুলোর আলাদা আলাদা নাম থাকলেও, একই ভূখণ্ডে গড়ে ওঠার কারণে এদেরকে একত্রে মেসোপটেমীয় সভ্যতা বলা হয়। বর্তমান ইরাক রাষ্ট্রের সীমানার মধ্যেই প্রাচীন মেসোপটেমীয়া অঞ্চল অবস্থিত। মেসোপটেমীয়া একটি গ্রিক শব্দ। যার অর্থ দুই নদীর মধ্যবর্তী ভূমি। মেসোপটেমীয়া বলতে টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা- ফোরাত) এই দুই নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলকে বোঝায়। এই উর্বর ভূখণ্ডের উত্তরে আর্মেনিয়ার পার্বত্যাঞ্চল, পশ্চিম ও দক্ষিণে আরব মরুভূমি; দক্ষিণ-পূর্বে পারস্য উপসাগর, পূর্বে এলাম পার্বত্যাঞ্চল এবং পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর অবস্থিত।

মেসোপটেমীয়ার অর্ন্তভুক্ত সভ্যতাসমূহ

প্রাচীন মেসোপটেমীয় অঞ্চলে বেশ কয়েকটি নগর সভ্যতার বিকাশ ঘটে। যেমন: সুমেরীয়, ব্যবিলনীয়, এ্যাসিরীয়, ক্যালডীয় ও আক্কাদীয় সভ্যতা।


নগর সভ্যতার উত্থান

আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৫,৫০০ অব্দে দক্ষিণ মেসোপটেমীয়ার অধিবাসীরা ইউফ্রেতিস নদীর পানির প্রবাহ পরিবর্তন করে এবং পানি সেচের ব্যবস্থা করতে শেখে। মেসোপটেমীয়ায় কৃষি কাজের জন্য এ ধরনের সেচ ব্যবস্থার খুবই দরকার ছিল। কারণ এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত খুবই কম হতো। আস্তে আস্তে ঐ অঞ্চলবাসীরা বুঝতে পারে যে, বৃষ্টির পানির চেয়ে, সেচের পানি চাষের জন্য বেশি উপযোগী এবং উপকারী। এতে জমির উর্বরতা ও উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এভাবে প্রচুর ফসল ফলতে থাকে। ফলে কিছু মানুষের হাতে অতিরিক্ত সম্পদ জমা হতে থাকে। পরবর্তীকালে এরা ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে এবং শাসক বা নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা গ্রহণ করে। এই অতিরিক্ত সম্পদ ব্যবহার করেই নগরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এবং কাঠামোর ভিত গড়ে উঠতে থাকে।


মেসোপটেমীয় সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্ট্য

উর্বর ভূমি হওয়ার কারণে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠির কাছে বসবাসের জন্য মেসোপটেমীয়া ছিল আকর্ষণীয় ভূ-খণ্ড। তাছাড়া ভৌগোলিকভাবে অরক্ষিত হওয়ার কারণেও বিদেশীদের আগমন এবং আক্রমণ দুইই ছিল সহজ ব্যাপার। ফলে বিভিন্ন গোষ্ঠির মানুষ মেসোপটেমীয়ার উর্বর ভূমিতে বসতি স্থাপনের চেষ্টা করেছে। আবার দক্ষিণে অবস্থিত আরব মরুভূমি থেকে মরু বেদুইনরাও মেসোপটেমীয়া আক্রমণের চেষ্টা করেছে। মেসোপটেমীয়া মিশরের মতো কোনো একজন রাজার শাসনাধীনে ছিল না। মন্দিরের প্রাচুর্য ও অবস্থান দেখে ধারণা করা হয় যে, এই অঞ্চলের মানুষ মন্দিরের বেধে দেয়া নিয়ম ও শাসন মেনে চলতে বাধ্য থাকতো। তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ধর্মীয় জীবন পরিচালিত হতো মন্দিরের নির্দেশ মতো।

এ কারণে দেখা যায় যে, মানুষের সার্বিক জীবন পরিচালনায় পুরোহিতদের ভূমিকা ছিল প্রধান। মেসোপটেমীয়ায় আইনের শাসন যেমন ছিল কঠোর, শাস্তির বিধানও ছিল তেমন কঠিন।

Post a Comment

0 Comments