লেখক পরিচিতি
১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট ফেনী জেলার অন্তর্গত মজুপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত ও রক্ষণশীল পরিবারে জহির রায়হান জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ। জহির রায়হানের পিতা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ্ কলকাতা ও ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর মা সৈয়দা সুফিয়া খাতুন। ১৯৪০ সালে তিনি কলকাতা মডেল স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর পিতার সঙ্গে মজুপুর গ্রামে চলে আসেন এবং স্থানীয় আমিরাবাদ হাই স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন।
১৯৫০ সালে তিনি একই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৩ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে তিনি আইএসসি পাস করেন। তিনি প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন এবং পরে তা ছেড়ে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। একজন সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও সর্বোপরি চলচ্চিত্রকার হিসেবে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। মুক্তিযুদ্ধ অবলম্বনে তাঁর ছবি ‘স্টপ জেনোসাইড’ পৃথিবীজুড়ে বিপুল সাড়া জাগায়। এ-ছাড়াও তিনি আরো অনেক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। প্রগতিশীল মানবতাবাদী এবং সমাজতান্ত্রিক চেতনাই তাঁর সাহিত্যকর্মের মৌল বিষয়। পঞ্চাশের দশকে ছাত্র অবস্থায় তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘সূর্যগ্রহণ’ (১৩৬২ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন নিয়ে রচিত তাঁর গল্প ও উপন্যাস আমাদের সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য সম্পদ। তিনি বাংলা একাডেমি ও স্বাধীনতা পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি তিনি নিখোঁজ ও শহিদ হন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা :
উপন্যাস : শেষ বিকেলের মেয়ে, হাজার বছর ধরে, আরেক ফাল্গুন, বরফ গলা নদী, আর কতদিন, কয়েকটি মৃত্যু। এছাড়া তিনি অনেক গল্প রচনা করেছেন।
ভূমিকা
নেতৃত্ব, একতা, কর্মস্পৃহা যে সকল প্রতিক‚লতাকে প্রতিহত করতে পারে জহির রায়হান রচিত ‘বাঁধ’ গল্পে তা খুব সাবলীল ভাষায় উপস্থাপিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে পুঁজি করে এক শ্রেণির মানুষের ধর্ম ব্যবসার কথা লেখক এ গল্পে তুলে ধরেছেন।
পাঠ-১
মূলপাঠ
আর কিছু নয়, গফরগাঁ থাইকা পীর সাহেবেরে নিয়া আস তোমরা। অনেক ভেবে চিন্তে বললেন রহিম সর্দার। তাই করেন হুজুর, তাই করেন! একবাক্যে সায় দিল চাষীরা। গফরগাঁ থেকে জবরদস্ত পীর মনোয়ার হাজীকেই নিয়ে আসবে ওরা। দেশজোড়া নাম মনোয়ার হাজীর। অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি তিনি। মুমূর্ষ রোগীকেও এক ফুঁয়ে ভালো করেছেন এমন দৃষ্টান্তও আছে।
সেবার করিমগঞ্জে যখন ওলাবিবি এসে ঘরকে ঘর উজাড় করে দিচ্ছিল তখন এই মনোয়ার হাজীই রক্ষা করেছিলেন গাঁটাকে। সাধ্য কি ওলাবিবির মনোয়ার হাজীর ফুঁয়ের সামনে দাঁড়ায়। দিন দুয়েকের মধ্যে তল্পিতল্পা গুটিয়ে পালিয়ে গেল ওলাবিবি, দু’দশ গাঁ ছেড়ে। এমন ক্ষমতা রাখেন মনোয়ার হাজী।
গাঁয়ের লোক খুশি হয়ে অজস্র টাকা পয়সা আর অজস্র জিনিসপত্র ভেট দিয়েছিল তাঁকে।
কেউ দিয়েছিল বাগানের শাক-সব্জী। কেউ দিয়েছিল পুকুরের মাছ। কেউ মোরগ হাঁস। আবার কেউ দিয়েছিল নগদ টাকা। দুধের গরুও নাকি কয়েকটা পেয়েছিলেন তিনি। এত ভেট পেয়েছিলেন যে, সেগুলো বাড়ি নিতে নাকি তিন তিনটি গরুর গাড়ি লেগেছিল তাঁর।
সেই সৌভাগ্যবান পীর মনোয়ার হাজী! তাঁকেই আনবে বলে ঠিক করল গাঁয়ের মাতব্বরেরা, চাষী আর ক্ষেত মজুররা। বললে, চাঁদা দিমু? কিসের লাইগা দিমু? ওই লোকডার পিছে ব্যয় করবার লাইগা?
মতি মাস্টারের কথা দাঁতে জিভ কাটলো জমির মুন্সি।
তওবা, তওবা, কহেন কি মাস্টার সাব। খোদাভক্ত পীর, আল্লার ওলি মানুষ। দশ গাঁয়ে যারে মানে, তার নামে এত বড় কুৎসা! ভালা কাজ করলা না মাস্টার, ভালা কাজ করলা না। ঘন ঘন মাথা নাড়লেন জমির ব্যাপারী। পীরের বদ দোয়ায় ছাই অইয়া যাইবা! কথা শুনে সশব্দে হেসে উঠল মতি মাস্টার। কি যে কও চাচা, তোমাগো কথা শুনলে হাসি পায়।
হাসি পাইবো না, লেখাপড়া শিখা তো এহন বড় মানুষ অইয়া গেছ। মুখ ভেংচিয়ে বললেন জমির ব্যাপারী। চাঁদা দিলে দিবা না দিলে নাই, এত বাহাত্তরী কথা ক্যান?
কিন্তু, বাহাত্তরী কথা আরো একজনের কাছ থেকে শুনতে হলো তাদের। শোনালো দৌলত কাজীর মেজ ছেলে রশিদ। শহরে থেকে কলেজে পড়ে। ছুটিতে বাড়িতে এসেছে বেড়াতে। চাঁদা তোলার ইতিবৃত্ত শুনে সে বলল, পাগল আর কি, পীর আইনা বন্যা রুখবো! এ একটা কথা অইলো?
কথা নয় হারামজাদা! জমির মুন্সি কোন জবাব দেবার আগেই গর্জি উঠলেন দৌলত কাজী নিজে। আল্লাহর ওলি, পীর দরবেশ; ইচ্ছা করলে সব কিছু করতে পারে। সব কিছু করতে পারে তাঁরা। এই বলে নূহ নবী আর মহাপ্লাবনের ইতিকথাটা ছেলেকে শুনিয়ে দিলেন তিনি।
খবরটা রহিম সর্দারের কানে যেতে দেরি হল না। দু-দশ গাঁয়ের মাতব্বর রহিম সর্দার। পঞ্চাশ বিঘে খাস আবাদী জমির মালিক। একবার রাগলে, সে রাগ সহজে পড়ে না তাঁর। জমির মুন্সির কাছ থেকে কথাটা শুনে রাগে থরথর করে কেঁপে উঠলেন তিনি, এ্যাঁ! খোদার পীরের ঠাট্টা তামাসা। আচ্ছা, মতি মাস্টারের মাস্টারি আমি দেইখা নিমু। দেইখা নিমু মইত্যা এ গেরামে কেমন কইরা থাহে। অত্যন্ত রেগে গেলেও একেবারে হুঁশ হারাননি রহিম সর্দার। কাজীর ছেলে রশিদের নামটা অতি সন্তর্পণে এড়িয়ে গেলেন তিনি। কাজী বাড়ি কুটুম্ব বাড়ি, বেয়াই বেয়াই সম্পর্ক, তাই।
পীর সাহেবের নূরানী সুরত দেখে গাঁয়ে ছেলে বুড়োরা অবাক হলো। আহা! এমন যার সুরত, গুণ তার কত বড়, কে জানে!
ভক্তি সহকারে পীর সাহেবের পায়ের ধুলো নিল সবাই। গরিব মানুষ হুজুর! মইরা গেলাম, বাঁচান। হুজুরের পা জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে উঠলেন জমির ব্যাপারী।
জমির ব্যাপারী বোকা নন। বোঝেন সব। খোদার মন টলাতে হলে আগে পীর সাহেবের মন গলাতে হবে। পীর সাহেবের মন গললে এ হতভাগাদের জন্যে খোদার কাছে প্রার্থনা করবেন তিনি। তারপরেই না খোদা মুখ তুলে তাকাবেন ওদের দিকে।
পীর সাহেব এসে পৌঁছলেন সকালে। আর ঘটা করে বৃষ্টি নামল বিকেলে।
বৃষ্টি, বৃষ্টি আর বৃষ্টি। সারাটা বিকেল বৃষ্টি হলো। সারা রাত চললো তার একটানা ঝপঝপ ঝনঝন শব্দ। সকালেও তার বিরাম নেই। প্রতি বছর এ সময়ে শ্রাবণ মাসের ‘ডাওর’। কেউ কেউ বলে বুড়ো বুড়ির ‘ডাওর’। এই ডাওরের আয়ুষ্কাল পনের দিন।
এই পনের দিন একটানা ঝড় বৃষ্টি হবে। জোরে বাতাস বইবে। বাতাস যদি বেশি থাকে আর অমাবস্যা কি পুর্ণিমার জোয়ারের যদি নাগাল পায় তাহলে সর্বনাশ! নির্ঘাত বন্যা!
‘খোদা, রক্ষা কর! রক্ষা কর খোদা! রহম কর এই অধমগুলোর ওপর! কান্নায় ভেঙে পড়লেন জমির ব্যাপারী। মনে মনে মানত করলেন। যদি ফসল নষ্ট না হয় তাহলে হালের গরু জোড়া পীর সাহেবকে ভেট দেবেন তিনি। গম্ভীর পীর সাহেব ঢুলে ঢুলে তছবি পড়েন আর খোদার মহিমা বর্ণনা করেন সবার কাছে। খোদার মহিমা বর্ণনা শেষ হলে পীর সাহেবের মহিমা বর্ণনা প্রসঙ্গে অসংখ্য আজগুবি ঘটনার অবতারণা করেন তাঁর সাকরেদরা।
নির্বাচিত শব্দের অর্থ ও টীকা :
অবতারণা- প্রস্তাবনা; ভূমিকা। অলৌকিক- মানুষের পক্ষে অসম্ভব; পৃথিবীতে ঘটে না এমন। আয়ুষ্কাল- জীবৎকাল। ইতিবৃত্ত- ইতিহাস। ওলাবিবি- প্রাচীন সমাজে পূজ্য কলেরা রোগের দেবী। কাফের- সত্য প্রত্যাখ্যানকারী; ইসলাম-বিরোধী লোক। তল্পিতল্পা- বিছানাপত্র বা অন্য জিনিসপত্রের বোঁচকা। নাফরমান- অবাধ্য; আদেশ অমান্যকারী। বাহাত্তরি কথা- বাহাত্তর বছর বয়স্ক শক্তিহীন অকেজো বৃদ্ধের সংলাপ; বাজে কথা। ভেংচি- উপহাসসূচক বিকৃত মুখভঙ্গি। সাকরেদ- শাগরেদ; চেলা; সহকারী। সন্তর্পণে- অতি সাবধানে।
সারসংক্ষেপ :
প্রতি বছরই প্রবল বষ্টিৃ তে বাঁধ ভেঙে যায়। বন্যায় ভেসে যায় ফসল। ফসল হারানোর বেদনায় সবাই আহাজারি করে। কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয় না। এ বছরও বন্যার সময় ঘনিয়ে এসেছে। গ্রামের মাতব্বররা ঠিক করল, বন্যা ঠেকানোর জন্য গফরগাঁ থেকে পীরসাহেবকে নিয়ে আসবে। বাধা দিল মতি মাস্টার আর কলেজ-পড়–য়া রশিদ। দোয়া পড়ে বন্যা ঠেকানো যায় - এ কথা তারা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাইল না। মাতব্বররা রুষ্ট হলেন। এদের পাপে খোদায়ি গজব নেমে আসবে ভেবে শঙ্কিত হলেন। যথারীতি পীরসাহেব এলেন। দোয়া-জিকির চলতে লাগল।
পাঠ-২
মূলপাঠ
মনে আশা জাগে চাষিদের। আনন্দে চক্চক্ করে ওঠে কোটরে ঢোকা চোখগুলো। ভীড়ের মাঝ থেকে গনি মোল্লা ফিসফিসিয়ে বললেন, কই নাই মনার পো? এই পীর যেই সেই পীর নয় খোদার খাস পীর!
যারা শুনেছে তারা মাথা নেড়ে সায় দিল, হ্যাঁ, কথাটা সত্যি। আর যারা শোনেনি তারাও সেই মুহূর্তে বিশ্বাস করলো কথাটা।
পীর সাহেব সব পারেন। কিন্তু, থামাচ্ছেন না প্রয়োজনবোধে থামাবেন তাই।
কিন্তু, মতি মাস্টার বিশ্বাস করলো না কথাটা। হেসে উড়িয়ে দিল। বললো, ঝড় থামাবে ওই বুড়োটি? মন্তর পড়ে ঝড় থামাবে?
হ্যাঁ, থামাবে। আলবত থামাবে। আকাশভেদী হুংকার ছাড়লেন গনি মোল্লা। চোখ রাঙিয়ে ফতোয়া দিলেন। এই নাফরমান বেদীনগুলো গাঁয়ে আছে দেইখাই তো গাঁয়ের এই দুরবস্থা।
হ্যাঁ, ঠিক কইছ মোল্লার পো। তাঁকে সমর্থন করলেন বুড়ো তিনজী মিঞা। এই কাফেরগুলোর গাঁ থাইকা না তাড়াইলে গাঁয়ের শান্তি নাই।
কিন্তু গাঁয়ের শান্তি রক্ষার চাইতে “ঢল’ রোখাটাই এখন বড় প্রশ্ন। প্রকৃতি উন্মাদ হয়ে পড়েছে। ক্ষুব্ধ বাতাস বারবার সাবধান করছে। ঢল হইবো ঢল। পানি ভরা চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন তিনজী মিঞা। রক্ত দিয়ে বোনা সোনার ফসল।
হায়রে ফসল!
হঠাৎ পাগলের মত চিৎকার করে ওঠেন তিনি, খোদা!
মসজিদে আজান পড়ছে। পীর সাহেব ডাকছেন সবাইকে। এস মিলাদ পড়তে এস। এস মঙ্গলের জন্য এস। টুপিটাকে মাথায় চড়িয়ে বৃষ্টির ভেতর ভিজে ভিজেই মসজিদের দিকে ছুট দিলেন জমির ব্যাপারী। যাবার সময় ঘরের বৌ-ঝিদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেলেন, এ রাত ঘুমাইবার রাত নয়। বুঝলা? অজু কইরা বইসা খোদারে ডাক।
অজুটা সেরে উঠে দাঁড়াতেই কার একটা হাত এসে পড়লো ছকু মুন্সির কাঁধের ওপর। জমির মুন্সির ছেলে ছকু মুন্সি। গাঁট্টাগোট্টা জোয়ান মানুষ। প্রথমটায় ভয়ে আঁতকে উঠে জিজ্ঞেস করলো, কে? ভয় নাই আমি মতি মাস্টার।
ব্যাপার কি? এ রাত্তির বেলা? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলে ছকু। মতি মাস্টার বললো, যাও কনহানে?
যাই মসজিদে। ছকু জবাব দিল। ক্যান তোমরা যাইবা না?
না। স্বল্প থেমে মতি মাস্টার বললো। এক কাজ কর ছকু। মসজিদে যাওয়া এহন রাখ। ঘর থাইকা কোদাল নিয়া বাইর অইয়া আয়। যা জলদি কর। কোদাল দিয়া কি অইবো? রীতিমত ঘাবড়ে গেল ছকু মুন্সি। যা ছকা। কোদাল আন। পেছন থেকে বললো মন্তু শেখ।
এতক্ষণে পুরো দলটার দিকে চোখ পড়লো ছকু মুন্সির। একজন দুজন নয়, অনেক। অন্তত জন পঞ্চাশেক হবে। সবার হাতে কোদাল আর ঝুড়ি।
মতি মাস্টার এত লোক জোটাল কেমন করে? কাজী বাড়ির পড়–য়া ছেলে রশিদকে দলের মধ্যে দেখে আরো একটু অবাক হল ছকু।
ব্যাপারটা অনেক দূর আঁচ করতে পারল সে। গতকাল এ নিয়েই কাজী পাড়ায় বুড়ো কাজীর সঙ্গে তর্ক করছিল মতি মাস্টার। গত কয়েক বছর কি খোদারে ডাকেন নাই আপনারা? হ্যাঁ, ডাকছিলেন। কিন্তু ফল কি হয়েছে? ফল কি বাঁচছে আপনাগো?
বাঁচে নাই। তাই কইতে আছলাম কেবল বইসা বইসা খোদারে ডাকলে চলবো না। এ কয়টা গাঁয়ে মানুষ তো আমরা কম নই। সবাই মিলে বাঁধটারে যদি পাহারা দিই, সাধ্য কি বাঁধ ভাঙে?
মতি মাস্টারের কথা শুনে দাঁত খিঁচিয়ে তেড়ে এসেছিলেন বুড়ো কাজী। অশব্য গালি-গালাজ করেছিলেন তাকে। সে কাল বিকেলের কথা। মসজিদে আজান হচ্ছে। পীর সাহেব ডাকছেন সবাইকে, এস মিলাদ পড়তে এস। এস মঙ্গলের জন্য এস।
সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিল ছকু। তারপর টুপিটাকে মাথায় চড়িয়ে মসজিদের দিকে পা বাড়ালো সে। খপ করে একখানা হাত চেপে ধরলে রশিদ, ছকু।
এই ছকা। ক্ষেপে উঠলো পণ্ডিত বাড়ির চাঁদু।
অগত্যা, কোদাল আর ঝুড়ি নিয়ে বেরিয়ে এল ছকু মুন্সি।
মাইল খানেক হাঁটতে হবে ওদের। তারপর বাঁধ।
নবীন কবিরাজের পুকুর পাড়ে এসে পৌঁছতেই জোরে বিদ্যুৎ চমকে উঠে প্রচণ্ড শব্দে বাজ পড়ল একটা। ভয়ে আঁতকে উঠে থমকে দাঁড়াল ছকু। খোদা সাবধান করছে তাদের। খবরদার যাইও না। যাইও না মাস্টার। থামো, থামো! হঠাৎ চীৎকার করে উঠলো ছকু মুন্সি। খোদা নারাজ হইবো, মসজিদে চল সবাই। ইস, চুপ কর ছকু। বৃষ্টিতে ভিজে কাঁপছে মতি মাস্টার। এখন কথা কইবার সময় না। জলদি চল। আবার চলতে শুরু করল ওরা। দূরে মসজিদ থেকে দরুদের শব্দে ভেসে আসছে। পীর সাহেবের সঙ্গে গলা মিলিয়ে দরুদ পড়ছে তিনজী মিঞা, জমির ব্যাপারী, রহিম সর্দার ও আরো কয়েকশ জোয়ান জোয়ান মানুষ। অসহায়ের মত ঊর্ধ্বে হাত তুলে চিৎকার করছে তারা। হে আসমান জমিনের মালিক! হে রহমানের রহিম! তুমিই সব! তুমি রক্ষা কর আমাদের!
ওদিক মরিয়া হয়ে কোদাল চালাচ্ছে মতি মাস্টারের দল। এ বাঁধ ভাঙতে দেবে না তারা। কিছুতেই না। তাদের সোনার ফসল ডুবতে দেবে না তারা কিছুতেই। কখনই না।
ঝঞ্জা-বিক্ষুব্ধ আকাশে বিদ্যুৎ চমকিয়ে বাজ পড়ছে। সোঁ সোঁ শব্দে বাতাস বইছে। খর¯্রােতা নদী ফুলে ফেঁপে ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। অমাবস্যার জোয়ার। নির্ঘাত বাঁধ ভেঙে পড়বে।
হায় খোদা! ঘরের বৌ-ঝিয়েরা করুণ আর্তনাদ করে ফরিয়াদ জানায় আকাশের দিকে চেয়ে। দুনিয়াতে ইমান বলে কিছু নেই তাই তা খোদা রাগ করেছেন। মানুষ গরু সব ভাসিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি। ধ্বংস করে দেবেন এই পৃথিবীটাকে, পাপে ভরা এই পৃথিবী।
দুরু দুরু বুক কাঁপছে তিনজী মিঞার। চোখের জলে ভাসছেন জমির ব্যাপারী। আর ঢুলে ঢুলে তছবি পড়ছেন।
হায়রে ফসল!
সোনার ফসল!
এ ফসল নষ্ট হতে পারে না। টর্চ হাতে ছুটোছুটি করছে মতি মাস্টার। কোদাল চালাও! আরো জোরে!
বাঁধে ফাটল ধরেছে।
এ ফাটল বন্ধ করতেই হবে।
অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে কোদাল চালাচ্ছে ওরা।
মন্তু শেখ চিৎকার করে বললে, আলির নাম নাও ভাইয়া, আলির নাম নাও।
আলির নামে কাম হইবো শেখের পো? বললে বুড়ো কেরামত। তারছে একডা গান গাও। গায়ে জোস আইবো।
মন্তু শেখ গান ধরলো।
গানের শব্দ ছাপিয়ে হঠাৎ বাজ পড়লো একটা কাছে কোথায়। কোদাল চালাতে চালাতে মতি মাস্টারকে আর তার চৌদ্দ পুরুষকে মনে মনে গাল দিতে লাগলো ছকু মুন্সি, খোদার সঙ্গে লাঠালাঠি। হা-খোদা, এই কি জমানা আইছে। খোদা, এই অধমের কোন দোষ নাই। এই অধমেরে মাপ কইরা দিও।
ঝুড়ি মাথায় বিড়বিড় করে উঠলো পণ্ডিত বাড়ির চাঁদু, হাত-পা গুটাইয়া মসজিদে বইসা বইসা ঢল রুখবো না আমার মাথা রুখবো। তারপর হঠাৎ এক সময়ে মতি মাস্টারের গলার শব্দ শোনা গেল, আর ভয় নাই চাঁদু। আর ভয় নাই। এবার তোরা একটু জিরাইয়া নে! এতক্ষণে হাসি ফুটলো সবার মুখে। শ্রান্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বাঁধের ওপর এলিয়ে পড়লো অবশ দেহগুলো। পঞ্চাশটি ক্লান্ত মানুষ। সূর্য তখন পুব আকাশে উঁকি মারছে।
আধ আলো অন্ধকার আকাশ বেয়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। মৃদুমন্দ বাতাসের তালে তালে নাচছে সোনালি ফসল। মসজিদ থেকে বেরিয়ে হঠাৎ সেদিকে চোখ পড়তে আনন্দে উৎফুল্ল− হয়ে উঠলো জমির বেপারী। ডোবেনি। ডুবতে দেননি পীর সাহেব।
খুশিতে চক্চক্ করে উঠলো জমির মুন্সির চোখ দুটো। দৌড়ে এসে পীর সাহেবের পায়ে চুমো খেলেন গনি মোল্লা। ডোবেনি ডোবেনি। ফসল তাদের ডোবেনি। ডুবতে দেননি পীর সাহেব।
এক মুহূর্তে যেন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে সমস্ত গাঁ-টা। ছেলে বুড়ো সবাই হুমড়ি খেয়ে ধেয়ে আসছে পীর সাহেবের পায়ে চুমো খাবার জন্যে। ঘুম চোখে তখনও ঢুলছেন পীর সাহেব। স্বল্প হেসে বললেন, খোদার কুদরতের শান কে বলতে পারে।
সাগরেদরা সমস্বরে বলে উঠলো, সারারাত না ঘুমাইয়া খোদারে ডাকছেন আমাগো পীর সাব। বাঁধ ভাঙ্গে সাধ্য কি? পীর সাহেব তখনো হাসছেন। স্বল্প পরিমিত হাসি আপেলের রক্তিমাভার মতো ফেটে ছড়িয়ে পড়ছে মুখের সর্বত্র।
নর্বাচিত শব্দের অর্থ ও টীকা :
অশ্রাব্য- শোনা যায় না এমন। আর্তনাদ- কাতর চিৎকার; বিপদসূচক ক্রন্দনধ্বনি। খরস্রোতা- প্রবল স্রোত; অত্যন্ত বেগবান প্রবাহ। ঝঞ্ঝা- প্রচণ্ড ঝড়। ফরিয়াদ- অভিযোগ জানানো। বিক্ষুব্ধ- অত্যন্ত রাগান্বিত; বিচলিত। বেদীন- ধর্মহীন। মৃদুমন্দ- কোমল; মন্থর। রক্তিমাভা- লাল আভা যুক্ত। রোখা- বাধা দেওয়া।
সৃজনশীল প্রশ্ন-১
ব্যবসায়ে লালবাতি জ্বলার কারণে সয়ফুল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এক বন্ধুর পরামর্শে সে পরিচিত হয় নবীপুরের পীরের সঙ্গে। পীরের কথাবার্তায় সয়ফুল মুগ্ধ হয়ে একসময় তাঁর মুরিদ হয়। তার পীরকে খেদমত করার সামর্থ্য নেই। তবু কল্যাণের প্রত্যাশায় একদিন তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসে। সয়ফুলের স্ত্রী অবশ্য এ কাজটি একদম পছন্দ করে নি।
ক. ‘ভেংচি’ কী?
খ. ‘তওবা, তওবা, কহেন কি মাস্টার সাব।’ -কে, কাকে, কোন প্রসঙ্গে বলেছিল?
গ. উদ্দীপকের সয়ফুলের স্ত্রী ও ‘বাঁধ’ গল্পের জমির মুন্সীর বৈসাদৃশ্য কোথায়? -আলোচনা করুন।
ঘ. “সয়ফুল এবং জমির মুন্সীর মতো লোকেরাই আমাদের সমাজে পীরপ্রথা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক।” -উদ্দীপক এবং ‘বাঁধ’ গল্পের আলোকে মন্তব্যটি বিচার করুন।
সৃজনশীল প্রশ্ন-২
‘লালসালু’ উপন্যাসে মহব্বতনগর গ্রামে মজিদ নামে এক লোকের আবির্ভাব ঘটে। তার বক্তব্য, এই গ্রামের ঘন ঝোপঝাড়ে আকীর্ণ শ্যাওলা-ধরা যে প্রাচীন কবরটি রয়েছে তা একজন মোদাচ্ছের পীরের। এরপর সে ঐ কবরের উপর লালসালু কাপড় বিছিয়ে দেয়। কবরকে অবলম্বন করে সে গুছিয়ে নেয় তার আয়-রোজগারের পথ। গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে নানা সংস্কারের কথা বলে, মাজারের ভয় দেখিয়ে সে শিকড় গাড়ে গ্রামটিতে। অবশ্য আক্কাস গ্রামে স্কুল প্রতিষ্ঠা করে মজিদের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে চায়।
ক. ‘কাফের’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘এ ফসল নষ্ট হতে পারে না।’ -উক্তিটি ব্যাখ্যা করুন।
গ. উদ্দীপকের মজিদ ও ‘বাঁধ’ গল্পের মনোয়ার হাজীর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে কি? -বিশ্লেষণ করুন।
ঘ. “সংস্কারাচ্ছন্ন পীরপ্রথার কবল থেকে সমাজকে এগিয়ে নিতে আক্কাস ও মতি মাস্টারের মত অগ্রসর চিন্তার মানুষের প্রয়োজন।” -উদ্দীপক ও ‘বাঁধ’ গল্পের আলোকে মূল্যায়ন করুন।
সৃজনশীল প্রশ্ন-১ এর নমুনা উত্তর:
ক. ভেংচি হল উপহাসসূচক বিকৃত মুখভঙ্গি।
খ. দাবিকৃত চাঁদা প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে জমির ব্যাপারী মতি মাস্টারের বিরুদ্ধে উক্তিটি করেছিল।গ্রামের পীরভক্তরা গফরগাঁও থেকে পীর মনোয়ার হাজিকে এনে এলাকার বন্যা ঠেকানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তারা মনে করে পীর সাহেব অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী, মুমূর্ষু রোগীকেও তিনি বাঁচাতে পারেন। তবে তাকে আনতে গেলে, সোজা বাংলায় বলা যায়, টাকার প্রয়োজন। সবাই চাঁদা দিতে রাজি হয়। কিন্তু যুক্তিবাদী আধুনিকমনস্ক মতি মাস্টার তার বিরোধিতা করে। জমির মুন্সির মতো লোকে মনে করে শিক্ষিত হয়ে এখনকার ছেলেরা মুরুব্বিদের মানে না, পীরদের শ্রদ্ধা করে না। তাই মতি মাস্টারের কথায় অনেকটা হতচকিত হয়ে জমির ব্যাপারী উক্তিটি করেছিল।
গ. উদ্দীপকের সয়ফুলের স্ত্রী ও ‘বাঁধ’ গল্পের জমির মুন্সীর মধ্যে বৈসাদৃশ্য পীরবিশ্বাসে। আমাদের সমাজে ধর্মবিশ্বাসের ক্ষেত্রে যুক্তির চেয়ে আবেগের প্রাধান্য বেশি থাকে। এর সুযোগ নেয় একশ্রেণির পীর, এরা ধর্মব্যবসায়ী। নিজেদের ব্যক্তি¯স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এরা অনেক সময় ধর্মের অপব্যাখ্যা করে। তাদের ধর্মীয় অপব্যাখ্যা অনেক সময় মূল ধর্মীয় বিশ্বাসকে আঘাত করে। উদ্দীপকের পীর এবং ‘বাঁধ’ গল্পের মনোয়ার হাজি এই শ্রেণির প্রতিনিধি।
উদ্দীপকে দেখা যায, সয়ফুল ব্যবসায়ে মার খেয়ে বন্ধুর পরামর্শে নবীপুরের পীরের মুরিদ হয় এবং তার সেবাযত্নের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য পীরকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে। কিন্তু সয়ফুলের বাস্তববাদী স্ত্রী বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখে নি। তিনি মনে করেন পীর নয়, মেহনত ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করা যায়। পীর কখনো ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারে না। পক্ষান্তরে, ‘বাঁধ’ গল্পে এলাকায় বন্যার প্রাদুর্ভাব হলে জমির মুন্সি গফরগাঁও হতে পীর মনোয়ার হাজিকে এনে দোয়া-দরুদের মাধ্যমে বন্যা রোখার চেষ্টা করে । সে মনে করে আল্লার পীর ইচ্ছে করলে সব কিছু করতে পারে।
ঘ. ধর্মান্ধ সয়ফুল এবং জমির মুন্সীর মতো লোকেরাই আমাদের সমাজে পীরপ্রথা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক। কুসংস্কার প্রতিটি সমাজে একটি সামাজিক ব্যাধি। মানুষের এই কুসংস্কার চেতনাকে কাজে লাগায় একশ্রেণির পীর। এভাবে তারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করে। আর তাদের সহযোগিতা করে মুরিদ নামে একশ্রেণির পরগাছা টাইপের লোক।
উদ্দীপকে দেখা যায, ধর্মান্ধ সয়ফুল ব্যবসায়ে মার খেয়ে বন্ধুর পরামর্শে নবীপুরের পীরের মুরিদ হয়। পীরকে সেবাযত্নের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজের বাড়িতে নিয়ে আসতে কুণ্ঠাবোধ করে না। ঘরে নিজের স্ত্রী আছে- একথাটা তার মনে থাকে না। সয়ফুলের বাস্তববাদী স্ত্রী বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখেনি। পক্ষান্তরে, ‘বাঁধ’ গল্পে দেখা যায়, এলাকায় বন্যার প্রাদুর্ভাব ঘটলে জমির মুন্সি গফরগাঁও হতে পীর মনোয়ার হাজিকে এনে দোয়া-দরুদের মাধ্যমে বন্যা রুখবার চেষ্টা করে । সে মনে করে আল্লার পীর ইচ্ছে করলে সব কিছু করতে পারে। মতি মাস্টার চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সে মতি মাস্টারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে। জমির মুন্সি সমমনাদের কাছে মতি মাস্টারদের মতো সংস্কারমুক্ত লোকদের বিরুদ্ধে নালিশ করে। মুন্সি মনে করে, খোদার মন টলাতে হলে আগে পীর সাহেবের মন গলাতে হবে।
তারপরে খোদা মুখ তুলে তাকাবেন। একসময় পীর মনোয়ার হাজি গ্রামে আসেন এবং খোদার মহিমা বর্ণনা করেন সবার কাছে। প্রসঙ্গক্রমে অসংখ্য আজগুবি ঘটনারও অবতারণা করেন তিনি।
মূলত ‘বাঁধ’ গল্পের জমির মুন্সি ও উদ্দীপকের সয়ফুলের মত ধর্মান্ধ লোকদের সরলতা, প্রশ্রয় ও সমর্থনে আমাদের সমাজে পীরপ্রথা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভণ্ড পীরেরা সাধারণত খুব কৌশলী ও বিচক্ষণ হয়ে থাকে। তারা মেধাশূন্য,এবং হুজুগে লোকদের বেছে নেয় পরগাছা সাজার জন্য। ‘বাঁধ’ গল্পের জমির মুন্সি এবং উদ্দীপকের সয়ফুলেরা পীরদের চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে, আর ক্ষতির সম্মুখীন হয় সমাজের সকলে। এভাবেই তারা আমাদের সমাজে পীরপ্রথা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
অ্যাসাইনমেন্ট : নিজে করুন
সৃজনশীল প্রশ্ন :
শিলার ছোটভাই সাদমান একটি কূপের কাছে খেলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। দাদু তাকে জ্বীনে ধরেছে মনে করে মসজিদের ইমামের কাছে তাবিজ আনতে যান। এতে শিলার মন সায় দেয় না। সে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত তার স্কুলশিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করে। শিলা সিদ্ধান্ত নেয় তার ভাইকে নিয়ে একজন চিকিৎসকের নিকট উপস্থিত হবে। অল্পক্ষণ পরেই সে বাবাকে নিয়ে হাঁটা দেয় চিকিৎসকের উদ্দেশ্যে।
ক. ‘নাফরমান’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘বাহাত্তরী কথা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. ‘বাঁধ’ গল্পের সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি তুলে ধরুন।
ঘ. “মতি মাস্টারের সংস্কারমুক্ত চেতনার প্রকাশ পরিলক্ষিত হয় উদ্দীপকের শিলা চরিত্রে।” -আলোচনা করুন।
0 Comments