Recent Posts

অর্থনৈতিক কার্যাবলি ও অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি (Economic and Non-Economic Activities)

 

প্রতি মানুষই বেঁচে থাকার তাগিদে বা অভাব পূরণের জন্য নানা রকম কাজ করে থাকে। এ সমস্ত কাজ মানুষের কার্যাবলি হিসেবে পরিচিত। জীবিকা নির্বাহের জন্য মানুষ অফিস-আদালত, কল-কারখানা, হাসপাতাল ও ক্ষেত-খামারসহ বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে। শিশুরা পড়াশুনা করে ও মাঠে খেলা করে, টিভি দেখে এসবই কাজের আওতায় পড়ে। এ সমস্ত কার্যাবলিকে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথাঃ ১। অর্থনৈতিক কার্যাবলি ও ২। অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি।

অর্থনৈতিক কার্যাবলি

মানুষের যেসব কার্যাবলি দ্রব্য বা সেবার উৎপাদন ও ভোগের সাথে সম্পর্কিত সেসব অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলা হয়। অর্থাৎ যেসব কাজ অর্থ আয় ও ব্যয়ের সাথে জড়িত তাই অর্থনৈতিক কাজ। এসব কার্যাবলির মাধ্যমে সম্পদের সৃষ্টি হয় এবং এগুলো জাতীয় আয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় শিক্ষকের শিক্ষকতা, ডাক্তারের সেবা, কৃষকের পরিশ্রম, শ্রমিকের কলকারখানায় কাজ সবই অর্থনৈতিক কাজ। সুতরাং যেসব কাজের বিনিময় মূল্য আছে অর্থাৎ যেসব কাজের বিনিময়ে অর্থ দিতে হয় সেগুলোই অর্থনৈতিক কাজ। যেমন: একজন শ্রমিক ৮ ঘন্টা কাজ করে ৫০০ টাকা মজুরি পায়।

অ-অর্থনৈতিক কাজ

মানুষের যেসব কার্যাবলি অর্থ আয়ের সাথে সম্পর্কিত নয় কিন্তু এসব কাজ থেকে মাঝে মধ্যে সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, সে সমস্ত কার্যাবলিকে অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলে। এসব কাজ জাতীয় আয়ে কোনো প্রভাব ফেলে না। মানুষ সামাজিক দায়িত্ববোধ ও মানসিক প্রশান্তি লাভের জন্য এসব কাজ করে থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় মা-বাবার সন্তান লালনপালন, খেলাধুলা ও ব্যায়াম করা, পরিবারের দেখাশুনা করা, ধর্ম চর্চা করা, অসহায় ও বিপদে পতিত মানুষকে সাহায্য করা ইত্যাদি।

উপরের আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি, একটি মাত্র বিষয় এ দুটি কার্যাবলির মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে তা হচ্ছে− কার্যাবলি দুটির উদ্দেশ্য। একই কাজ অর্থনৈতিক ও অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি দুটিই হতে পারে। যেমন: একজন মা যখন স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান তখন এটি অর্থনৈতিক কাজ। কারণ এ কাজের বিনিময়ে তিনি পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। আবার তিনিই যদি বাসায় নিজ সন্তানদের পড়ান তখন সেটি অÑঅর্থনৈতিক কাজ। কারণ এখানে একই কাজের বিনিময়ে তিনি কোনো পারিশ্রমিক পান না। এখানে সন্তানদের প্রতি দায়িত্ববোধ আর স্নেহ-মমতা কাজ করে। 

Post a Comment

0 Comments